শোকাবহ আগস্টে প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা আলহাজ্ব মো. আব্দুস সত্তার এর গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলী

প্রকাশিত: ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২, ২০২১

শোকাবহ আগস্টে প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা আলহাজ্ব মো. আব্দুস সত্তার এর গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলী

সিলেটর নিউজ টুয়েন্টিফোরঃ
শোকাবহ আগস্টের শুরুতে গভীর শ্রদ্ধা জানালেন জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নয়াবন্ধর স্কুল এন্ড গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. আব্দুস সত্তার। তিনি ২ আগস্ট সোমবার এক প্রেস বার্তয় বলেন শোকের মাস আগস্ট শুরু। আগস্ট মানে বাঙালির শোকের মাস, আগস্ট মানেই বাঙালি জাতির বেদনা বিধুর শোকের মাস। এই শোকের মাসেই বাঙালির স্বাধীনতার স্থপতির বুকের তাজা রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল স্বাধীন শ্যামল বাংলার মাটি।
এক বছর ঘুরে আবার এসেছে বাঙালি জাতির ইতিহাসে রক্তের কালিতে লেখা শোকাবহ আগস্ট। আজ সোমবার আগস্টের ২য় দিন। বাঙালি জাতির জন্য যিনি স্বাধীনতার বিজয় কেতন আকাশে উড়িয়েছিলেন, তাকেই হত্যা করে তার আদর্শের পরিসমাপ্তি ঘটানোর মাধ্যমে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার মাধ্যমে ইতিহাস কলঙ্কিত করতে চেয়েছিল হায়েনারা। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করলেও হায়েনারা তাদের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে পারেনি। বাঙালি জাতি ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে শোককে শক্তিতে পরিণত করার মাধ্যমে প্রতি মুহূর্তে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
১৯৭৫ সালের ১৪ আগস্ট শেষ রাতে (১৫ আগস্ট) ঘাতকরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসায় নৃশংসভাবে হত্যা করে। তাকে সপরিবারে নিঃশেষ করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, জ্যেষ্ঠ পুত্র মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, দ্বিতীয় পুত্র মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, কনিষ্ঠ পুত্র শিশু শেখ রাসেল, সদ্য বিবাহিত পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসেরকে সেখানে হত্যা করা হয়। বেইলি রোডে সরকারি বাসায় হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছোট মেয়ে বেবি সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, দৌহিত্র সুকান্ত আবদুল্লাহ বাবু, ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত, আবদুল নঈম খান রিন্টুকে। আরেক বাসায় হত্যা করা হয় তার ভাগ্নে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণিকে। তারা ধানমন্ডি এলাকার বর্তমান সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপসের বাবা-মা।
বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আক্রমণ হয়েছে শুনে সেখানে যাওয়ার জন্য রওনা দেন বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদ। তবে ৩২ নম্বরের সামনে পথভ্রষ্ট সেনা কর্মকর্তারা তাকে প্রথমে বাধা দেয় ও পরে হত্যা করে। এছাড়া ওইদিন ৩২ নম্বরের বাড়িতে কর্তব্যরত অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ড বিশ্বের বুকে নিন্দিত ও ঘৃণিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের উদাহরণ হয়ে আছে। সেদিন ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর বড় সন্তান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ও ছোট বোন শেখ রেহানা শেখ হাসিনার স্বামী প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী প্রয়াত ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়ার কর্মস্থল জার্মানিতে থাকায় বেঁচে যান।
বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার বীজসূত্র বপন করার মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়ে তা বাস্তবে পরিণত করেছিলেন। আর এই স্বাধীনতার স্বপ্নপুরুষ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার মাধ্যমে বীর বাঙালির ইতিহাসে কলঙ্কিত এক অধ্যায় সূচিত হয়েছে এই আগস্ট মাসেই।
ঘাতকরা ভেবেছিল বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে তার আদর্শের পতন ঘটাতে, কিন্তু ঘাতকরা তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। যে কাজটি বর্বর হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীও করার সাহস করেনি, সেটিই করল এই দেশের কিছু কুলাঙ্গার। স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি চক্রের ষড়যন্ত্রের শিকার হলেন স্বাধীনতা আন্দোলনের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গঠন করতে দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছিলেন তখনই ঘটানো হয় এ নৃশংস ঘটনা। পরিসমাপ্তি ঘটে একটি ইতিহাসের। সে থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম বাংলার আকাশ-বাতাস ও মানুষের মন থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছে ষড়যন্ত্রকারী ঘাতকরা, যা কোনোদিন হয়নি, হবেও না। পৃথিবীতে বাঙালি জাতি যতদিন থাকবে ততদিনই থাকবে বঙ্গবন্ধুর নাম, তার কর্ম।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

shares